প্রজনন-সংক্রান্ত রোগ (11.4)

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - জীববিজ্ঞান (নতুন সংস্করণ) জীবের প্রজনন | - | NCTB BOOK
125
125
common.please_contribute_to_add_content_into প্রজনন-সংক্রান্ত রোগ.
common.content

এইডস (Acquired Immune Deficiency Syndrome বা AIDS) (11.4.1)

165
165
চিত্র 11.14: HIV ভাইরাসের পঠন

এইডস (Acquired Immune Deficiency Syndrome বা AIDS)
বর্তমান বিশ্বে এইডস একটি মারাত্মক ঘাতক ব্যাধি হিসেবে পরিচিত। 1981 সালে রোগটি আবিষ্কৃত হয়। Acquired Immune Deficiency Syndrome-এর শব্দগুলোর আদ্যক্ষর দিয়ে এ রোগটির নামকরণ করা হয়েছে AIDS। UNAIDS কর্তৃক প্রকাশিত 2016 সালের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় যে সারা বিশ্বে বর্তমানে প্রায় 3 কোটি 67 লাখ মানুষ AIDS-এর জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত। এর মধ্যে প্রায় 48.5 শতাংশ হলো 15 বছরের বেশি বয়সী নারী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রায় 164 টি দেশে এই রোগের বিস্তার ঘটেছে। Human Imrnune Deficiency Virus সংক্ষেপে HIV ভাইরাসের আক্রমণে এইডস হয়। এই ভাইরাস শ্বেত রক্ত কোষের ক্ষতিসাধন করে এবং এ কোষের এন্টিবডি তৈরিসহ রোপ প্রতিরোধ-সংক্রান্ত কাজে বিঘ্ন ঘটায়। ফলে শ্বেত রক্ত কোষের সংখ্যা (বিশেষ করে CD4 জাতীয় শ্বেত রক্তকোষ) ও এন্টিবডির পরিমাণ ক্রমশ কমতে থাকে। এই ভাইরাস মানবদেহে সুপ্ত অবস্থায় অনেক দিন থাকতে পারে। এই ভাইরাসের আক্রমণে রোগীর দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বিনষ্ট হয়ে যায় বলে রোগীর মৃত্যু অনিবার্য হয়ে পড়ে। কারণ এইডস রোগীর রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করার মতো কোনো ঔষধ এখনও আবিষ্কার হয়নি।
এইডস রোগের কারণ
নিম্নলিখিত কারণে একজন সুস্থ ব্যক্তি এই ঘাতক রোগ দ্বারা আক্রান্ত হতে পারেন। যেমন:
(1) এইডস আক্রান্ত পুরুষ বা মহিলার সাথে অনিরাপদ যৌনমিলনের মাধ্যমে এ রোগ হয়।
(ii) দুর্ঘটনাজনিত রস্তক্ষরণ, প্রসবজনিত রক্তক্ষরণ, বড় অস্ত্রোপচার, জন্তশূন্যতা, থ্যালাসেমিয়া, ক্যান্সার ইত্যাদি ক্ষেত্রে দেহে রক্ত পরিসঞ্চালন প্রয়োজন হয়। এ অবস্থায় এইডস রোগে আক্রান্ত রোগীর রক্ত সুস্থ ব্যক্তির দেহে সঞ্চালন করলে এইডস রোগ হয়।

(iii) এইডসে আক্রান্ত বাবা থেকে সরাসরি সন্তানে রোগটি ছড়ায় না। বাবার সাথে যৌনমিলনের মাধ্যমে মায়ের এইডস হতে পারে এবং আক্রান্ত মায়ের গর্ভের সন্তান তখন এইডস রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এ রোগে আক্রান্ত মায়ের দুধ শিশু পান করলে সে শিশুও এইডসে আক্রান্ত হতে পারে।

(iv) HIV জীবাণুযুক্ত ইনজেকশনের সিরিঞ্জ, সুচ, দন্ত চিকিৎসার যন্ত্রপাতি এবং অপারেশনের যন্ত্রপাতির ব্যবহারের মাধ্যমেও সুস্থ ব্যক্তি এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এমনকি সেলুনে একই ব্লেড একাধিক ব্যক্তি ব্যবহার করলে তার মাধ্যমেও রোগটি ছড়াতে পারে।

(v) এইডসে আক্রান্ত ব্যক্তির কোনো অঙ্গ অন্য ব্যক্তির দেহে প্রতিস্থাপন করলে এ রোগ সংক্রমিত হয়।
এইডস রোগের লক্ষণ
রোগ জীবাণু সুস্থ দেহে প্রবেশ করার প্রায় 6 মাস পরে এই রোগের লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। তখন এর প্রকাশ অত্যন্ত মৃদু থাকে এবং কিছুদিনের মধ্যেই মিলিয়ে যায়। তারপর কয়েক মাস থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত রোগী আপাতদৃষ্টিতে সুস্থ থাকে কিন্তু তার দেহের মধ্যে এইডসের ভাইরাস সংখ্যাবৃদ্ধি করতে থাকে। ভাইরাস যথেষ্ট সংখ্যার বৃদ্ধি পেলে হঠাৎ করেই অসুখ মারাত্মকভাবে ফিরে আসে। তখন আর বেশি কিছু করার থাকে না। এর আগে সেই ব্যক্তি যে এইডস রোগের বাহক তা বোঝা মুশকিল।


এইডসের লক্ষণগুলো হলো:
• দ্রুত রোগীর ওজন কমতে থাকে।
এক মাসেরও বেশি সময়ব্যাপী একটানা জ্বর থাকে অথবা জ্বর জ্বর ভাব দেখা দেয়।
• এক মাস বা তারও বেশি সময় ধরে পাতলা পায়খানা হয়।
• অনেক দিন ধরে শুকনো কাশি হতে থাকে।
• ঘাড় এবং বগলে ব্যথা অনুভব হয়, মুখমণ্ডল খসখসে হয়ে যায়।
• মুখমন্ডল, চোখের পাতা, নাক ইত্যাদি অঙ্গ হঠাৎ ফুলে যায় এবং সহজে এই ফোলা কমে না।
• সারা দেহে চুলকানি হয়।


এইডস রোগ প্রতিরোধের উপায়
তোমরা ইতোমধ্যে এই রোগ সম্পর্কে জেনেছ। এসো এগুলো মনে আছে কি না তা পরীক্ষা করে নেওয়া যাক।
এইডস প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা কী?
এই রোগ বিস্তারের কারণগুলো থেকে বিরত থেকে রোগটি প্রতিরোধ করা কি সম্ভব? তোমরা প্রতিরোধের উপায়গুলো বোর্ডে লেখ ও একটি সংক্ষিপ্তসার তৈরি কর।

একক কাজ
কাজ: তোমরা 5 জন করে এক একটি দলে ভাগ হয়ে এইডস প্রতিরোধের বিষয়ে পোস্টার/ লিফলেট অঙ্কন কর।
common.content_added_by
টপ রেটেড অ্যাপ

স্যাট অ্যাকাডেমী অ্যাপ

আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।

ভিডিও
লাইভ ক্লাস
এক্সাম
ডাউনলোড করুন
Promotion